ছবি : এন্ডু সাইমন্ডস
প্রিয় ক্রিকেট ডটকমঃ না ফেরার দেশে চলে গেলেন অষ্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার এন্ডু সাইমন্ডস। এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শনিবার রাতে (১৪মে) অষ্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। উল্লেখ্য শনিবার রাতে কুইন্সল্যান্ডের অ্যালিস রিভার ব্রিজের নিকটবর্তী হার্ভে রেঞ্জ রোডে তাঁর গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় এবং এতে সাইমন্ডস মৃত্যবরণ করেন।মৃত্যুকালে এন্ডু সাইমন্ডসের বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর।এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের অকাল প্রয়াণে ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এন্ডু সাইমন্ডসের ক্যারিয়ার
অষ্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের মধ্যে এন্ডু সাইমন্ডসের নামটিও উচ্চারিত হয়।সাইমন্ডস ২০০৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অষ্ট্রেলিয়ার শিরোপা জয়ে দারুণ ভূমিকা পালন করেন।বহু কারণে আলোচিত সমালোচিত হলেও এন্ডু সাইমন্ডস নিজেকে সফল অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এছাড়া অসাধারণ এক ফিল্ডার হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে।এন্ডু সাইমন্ডসের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী এখানে তুলে ধরছি।
টেস্ট ক্যারিয়ার
এন্ডু সাইমন্ডস অষ্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬টি টেস্ট খেলেছেন।টেষ্টে ব্যাট হাতে ১৪৬২ রান ও বল হাতে ২৪টি উইকেট নিয়েছেন এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার।
ওয়ানডে ক্যারিয়ার
এন্ডু সাইমন্ডস অষ্ট্রেলিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডার হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়া ফিনিশার ও ফিল্ডার হিসেবেও তাঁর দারুণ সফলতা রয়েছে।সাইমন্ডস অষ্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে ৫০৮৮ রান ও বল হাতে ১৩৩টি মূল্যবান উইকেট নিয়েছেন।
টিটুয়েন্টি ক্যারিয়ার
এন্ডু সাইমন্ডস অষ্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন যেখানে তিনি ব্যাট হাতে ৩৩৭ রান ও বল হাতে ৮টি উইকেট নেন।
যেসব ক্লাবে খেলেছেন
এন্ডু সাইমন্ডস বিখ্যাত সব ক্লাবের হয়ে ফাষ্টক্লাস ক্রিকেট খেলেছেন।সাইমন্ডস যেসব ক্লাবে খেলেছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেকান চার্জার্স,সারে, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
এন্ডু সাইমন্ডসের কিছু অজানা তথ্য
এন্ডু সাইমন্ডসের অকাল মৃত্যুতে ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে আরেক অষ্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্নও মৃত্যবরণ করেন। আসুন এন্ডু সাইমন্ডসের বিভিন্ন অজানা তথ্য জেনে নিই।
জন্ম ইংল্যান্ডে
এন্ডু সাইমন্ডস ক্রিকেট বিশ্বে অষ্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন যদিও তাঁর জন্ম ইংল্যান্ডে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি
এন্ডু সাইমন্ডস ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে অষ্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। এবং ঐ সময়ে অষ্ট্রেলিয়া সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বীকৃত ক্রিকেটে তিনি প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান।
প্রথমশ্রেণীর ক্রিকেটে রেকর্ড ছক্কা
এন্ডু সাইমন্ডস ১৯৯৫ মৌসুমে ইংল্যান্ডের প্রথম শ্রেণীর টিম গ্লুচেষ্টারশায়ারের হয়ে খেলার সুযোগ পান এবং একম্যাচে ১৬টি ছক্কাসহ ২৫৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন যা দীর্ঘদিন যাবত প্রথমশ্রেণীর ক্রিকেটম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড ছিল।
ইংল্যান্ড এ দলে ডাক পেয়েছিলেন
১৯৯৫ মৌসুমে ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে অসাধারণ ব্যাটিং ও ব্রিটিশ পাসপোর্ট থাকায় এন্ডু সাইমন্ডসকে ইংল্যান্ড এ দলের জন্য বাছাই করা হয়েছিল।তবে সাইমন্ডস ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানান।
রাগবী লীগেও খেলেন
এন্ডু সাইমন্ডস একসময় অষ্ট্রেলিয়ার রাগবী লীগেও নাম লেখান যদিও পরবর্তীতে তিনি আবার ক্রিকেটে ফিরে আসেন।
শেন ওয়ার্নের ৫০০তম উইকেট শিকারের ম্যাচে মাঠে ছিলেন
অষ্ট্রেলিয়ার লেগস্পিন লিজেন্ড শেন ওয়ার্ন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁর ৫০০তম টেস্ট উইকেট নেন এবং সেই উইকেট লাভে সাইমন্ডসের(তিনি ক্যাচ নেন) অবদান ছিল।
দাতব্যসংস্থার জন্য ট্রেডমার্ক ড্রেডলক দান
এন্ডু সাইমন্ডসের একটি ট্রেডমার্ক ড্রেডলক ছিল যা তাকে মাঠে আলাদাভাবে তুলে ধরতো। এবং পরবর্তীতে তিনি তাঁর ট্রেডমার্ক ড্রেডলকটি এক দাতব্য সংস্থাকে দান করেন ও সমস্ত মাথার চুল কেটে ফেলেন।
বিদেশি হিসেবে প্রথম আইপিএলে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক
এন্ডু সাইমন্ডস তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। মূলত একারণে আইপিএলের প্রথম আসরে তিনি বিদেশি প্লেয়ারদের মধ্যে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকে ডেকান চার্জার্সে খেলার সুযোগ পান।
বিগবসে কাজ করেছেন
সাইমন্ডস একসময় ভারতের মিডিয়া জগতে বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন এবং তিনি ২০১১ সালে দুই সপ্তাহ ভারতের টিভি শো বিগ বসে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন