প্রিয় ক্রিকেট ডটকমঃ ক্রিকেটে কোচদের ভূমিকা ব্যাপক এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচদের ভূমিকা আরও বিস্তৃত। ক্রিকেটে একজন ভালো কোচ টিমের সাফল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন প্রতিভা অন্বেষণ,একটি টিমের সার্থক ভবিষ্যত বিনির্মাণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে থাকেন। ক্রিকেটের সফল কোচ হিসেবে অষ্ট্রেলিয়ার সাবেক কোচ জন বুকানন, ভারতের সাবেক কোচ গ্যারি কারষ্টেন, শ্রীলঙ্কা ও পর্রবর্তীতে বাংলাদেশের সাবেক কোচ ডেভ হোয়াটমোরের নাম করা যায়। এই লেখায় বাংলাদেশের বিদেশি কোচদের রেকর্ড, পরিসংখ্যান ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব।
গর্ডন গ্ৰিনিজ
সাবেক উইন্ডিজ লিজেন্ড গর্ডন গ্ৰিনিজ(নভেম্বর ১৯৯৬-মে ১৯৯৯) বাংলাদেশের প্রথম বিদেশি কোচ। তাঁর কোচিংয়ে বাংলাদেশ প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা আইসিসি ট্রফি জয় করে। এছাড়া তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে পরাজিত করে।গ্ৰিনিজ বাংলাদেশের কোচ হিসেবে কাজ করে দারুণভাবে প্রশংসিত হন। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ২৩টি ওডিআই খেলে ৩ জয় পায় ও ২০ ম্যাচে পরাজিত হয়।
এডি বারলো
গর্ডন গ্ৰিনিজ পরে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন এডি বারলো।বারলো আগষ্ট ১৯৯৯ থেকে জানুয়ারি ২০০১ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ ছিলেন।বারলোর অধীনে বাংলাদেশ দল ১ টেস্ট ও ৬টি ওয়ানডে খেলে সবগুলোতে পরাজিত হয়।
ট্রেভর চাপেল
অষ্ট্রেলিয়ার ট্রেভর চাপেল বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন ২০০১ সালে। তিনি ২০০১ সালের এপ্রিল থেকে ২০০২ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।চাপেলের অধীনে বাংলাদেশ দল ১০টি টেস্ট খেলে ৯ টিতে পরাজিত হয় এবং ১টি টেস্ট ড্র করে।এই অষ্ট্রেলীয় কোচের অধীনে বাংলাদেশ ৯টি ওয়ানডে খেলে সবগুলোতে পরাজিত হয়।
মহসিন কামাল-আলী জিয়া
২০০২ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৩ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মহসিন কামাল ও আলী জিয়া ।এদের অধীনে বাংলাদেশ ৬টি টেস্ট খেলে সবগুলোতে পরাজিত হয়। এছাড়া এদের অধীনে বাংলাদেশ ১৭টি ওয়ানডে ম্যাচ ১৫টিতে পরাজয় বরণ করে এবং ২টি ম্যাচে ফল নিষ্পত্তি হয়নি।
ডেভ হোয়াটমোর
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সফলতা পেয়েছেন ডেভ হোয়াটমোর।এই অষ্ট্রেলীয় কোচ ২০০৩ সালের জুন থেকে ২০০৭ এর মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ২৭টি টেস্ট খেলে ১টি ম্যাচে জয় পায় ও ৪টি ম্যাচ ড্র করে এছাড়া বাকি ২২টি ম্যাচে পরাজিত হয়।হোয়াটমোরের অধীনে বাংলাদেশ ৮৯টি ওয়ানডে খেলে ৩৩ ম্যাচে জয়ী হয় এবং ৫৬টি ম্যাচে পরাজিত হয়। এছাড়া এই হোয়াটমোরের অধীনে বাংলাদেশ ১টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে সেটিতে জয়লাভ করে।
জেমি সিডন্স
জেমি সিডন্স অক্টোবর ২০০৭ থেকে এপ্রিল ২০১১ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সিডন্সের অধীনে বাংলাদেশ ১৯টি টেস্ট খেলে ২টি ম্যাচে জয় ও ১টি ম্যাচ ড্র করে এছাড়া বাকি ১৬ ম্যাচে পরাজিত হয়।এই অষ্ট্রেলীয় কোচের অধীনে বাংলাদেশ ৮৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৩১টিতে জয় ও ৫৩টি ম্যাচে পরাজিত হয়। এছাড়া সিডন্সের অধীনে বাংলাদেশ ৮টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে সবগুলোতে পরাজিত হয়।
স্টুয়াট ল
সিডন্সের পর বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্টুয়াট ল।স্টুয়াট ল ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১২ এর মে পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ৫টি টেস্ট খেলে ১টি ড্র ও ৪টি ম্যাচে পরাজয় বরণ করে।এই কোচের অধীনে বাংলাদেশ ১৫টি ওয়ানডে খেলে ৫টিতে জয় পায় ও ১০টি ম্যাচে পরাজিত হয়। এছাড়া লর অধীনে বাংলাদেশ দুটি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১টিতে জয়ী ও অপর ম্যাচে পরাজিত হয়।
রিচার্ড পাইবাস
রিচার্ড পাইবাস ২০১২ সালের মে থেকে ২০১২ এর অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ দল ৮টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৪টিতে জয় ও বাকি ৪ ম্যাচে পরাজিত হয়।
শেন জার্গেনসেন
শেন জার্গেনসেন ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে মে ২০১৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ ছিলেন । তাঁর সময়ে বাংলাদেশ ৮টি টেস্ট খেলে ১টি জয় ,৪ ড্র ও ৩টিতে পরাজিত হয়। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ১৬টি ওয়ানডে খেলে ৫টিতে জয় ও ১০ ম্যাচে পরাজিত হয় এছাড়া একটি ম্যাচে ফল নিষ্পত্তি হয়নি।শেন জার্গেনসেনের অধীনে বাংলাদেশ ১৩টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৩টি জয় ও বাকি ১০ ম্যাচে পরাজিত হয়।
হাথুরুসিংহে
মে ২০১৪ থেকে নভেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের কোচ ছিলেন।এই লংকান কোচের অধীনে বাংলাদেশ ২১টি টেস্ট খেলে ৬টিতে জয় ও ৪টি ম্যাচ ড্র করে এবং বাকি ১১টেষ্টে পরাজিত হয়।হাথুরুসিংহের সময়ে বাংলাদেশ ৫২টি ওয়ানডে খেলে ২৫ ম্যাচে জয় ও ২৩টি পরাজিত হয় এবং ৪টি ম্যাচে ফল নিষ্পত্তি হয়নি। এছাড়া হাথুরুসিংহের সময়ে বাংলাদেশ ২৯টি টিটুয়েন্টি খেলে ১০টিতে জয় ও ১৭ ম্যাচে পরাজিত হয় এবং ২টি ম্যাচে ফল নিষ্পত্তি হয়নি।
স্টিভ রোডস
স্টিভ রোডস ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০১৯ এর জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে ছিলেন। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ৮টি টেস্ট খেলে ৩টিতে জয় ও ৫টি ম্যাচে পরাজিত হয়। এছাড়া তাঁর সময়ে বাংলাদেশ ৩০ টি ওয়ানডে খেলে ১৭টি জয় ও ১৩ ম্যাচে পরাজিত হয়।রোডসের সময়ে বাংলাদেশ ৭টি টিটুয়েন্টি খেলে ৩টিতে জয় পায় এবং ৪টি ম্যাচে পরাজিত হয়।
রাসেল ডমিঙ্গো
সর্বশেষ বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন রাসেল ডমিঙ্গো(আগষ্ট২০১৯-বর্তমান)।ডমিঙ্গোর অধীনে বাংলাদেশ ৯টি টেস্ট খেলেছে যেখানে ১জয়,১ ড্র ও ৭টিতে হার রয়েছে।এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচের অধীনে বাংলাদেশ ৯টি ওয়ানডে খেলে ৬টিতে জয় ও ৩টি ম্যাচে হেরেছে।ডমিঙ্গোর অধীনে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ১৪টি টিটুয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৬ টিতে জয় ও ৮টিতে পরাজিত হয়েছে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন